আমরা কোন কাজের বৈধতা খুজি দুটো কারণে। ১/ বিবেককে বুঝ দিতে চাই কাজটা ঠিক আছে। ২/ সমাজে সেই কাজের এবং কর্মীর ধারাবাহিক অস্তিত্ব নিশ্চিত করতে চাই। একজন খুনিকেও তার কাজের বৈধতা খুজে নিতে হয়। সমাজে বৈধতা না পেলে সেই কাজের পুনরাবৃত্তি হয়না অথবা হলেও সেটা নিন্দনীয়, গর্হিত বলেই বিবেচিত হয়।
প্রথম কারণটা নিজের জন্য আর দ্বিতীয় কারণটা সোশ্যাল কন্ট্রাক্টের কারণে। সোশ্যাল কন্ট্রাক্ট থেকেই পরবর্তীতে রাষ্ট্রের উৎপত্তি এবং বিকাশ হয়। আমাদের দেশে বৈধতার এক নতুন এবং ধ্বংসাত্মক সুত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। ধরা যাক আওয়ামী লীগ একটা খারাপ কাজ করেছে, সেই কাজটা খারাপ, নিন্দনীয় এটা বলার আগেই তার সমর্থকেরা দেখাতে শুরু করবেন ঠিক একই ধরণের কাজ বি এন পি আমলে হয়েছিল কিনা? আবার একইভাবে বি এন পির বিরুদ্ধে অভিযোগ হলে তারাও খুজতে শুরু করে কাছাকাছি ধরণের কোন কাজ আওয়ামী লীগ করেছে কিনা? যেন শত্রুর কোন ইন্সটেন্স থাকলেই আমার কাজটা বৈধ হয়ে যায়। কোন দলের সমর্থকের মনেই সেই কাজটার বিষয়ে ঘৃণার সঞ্চার হয়না। কাউকে বলতে শোনা যায়না কাজটা ঠিক হয়নি। এভাবেই দুই দল এবং তাদের সমর্থকরা গ্যারান্টি অব কন্টিনিউড এক্সিস্টেন্স তৈরি করে নিয়েছে।
এর সবচাইতে ভয়াবহ দিক হচ্ছে, খারাপ কাজগুলো চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে। এক আমলে ১০০ টা হরতাল হলে আরেক আমলে ১১০ টা হরতাল করার বৈধতা তৈরি হয়ে যায়।
ধরা যাক এর পরে কোন এক বি এন পি আমলে হল মার্কের মত ব্যাংক লুট হোল, তখন যে প্রতিবাদ আর সমালোচনা হবে এবং যেই সমালচনায় হয়তো আওয়ামী লীগও যোগ দেবে, সেখানে বি এন পি র পক্ষ থেকে বলা হবে, কই তোমাদের সময়েও তো এমন হয়েছিল?
আমজনতা শুধু মেহের আলির মতো পাগল হয়ে ক্ষমতার প্রাসাদের চারিদিকে ঘুরে ঘুরে প্রলাপ বকে, “তফাৎ যাও, সব ঝুট হ্যাঁয়”।।
লেখাটির ফেইসবুক ভার্সন পড়তে চাইলে এইখানে ক্লিক করুন