কোলকাতায় এসেছিলাম।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস ভারত উপমহাদেশে স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি নিয়ে একটা বই প্রকাশ করেছে “Healers or Predators?” এই শিরোনামে। বইটার বাংলাদেশ অংশটা লিখেছেন, আমাদের বড় ভাই Khairul Islam । বইয়ের ভুমিকা লিখেছেন অমর্ত্য সেন। আজকে বইটার মোড়ক উন্মোচন এবং তার পরে একটা সিম্পোজিয়াম হল। অমর্ত্য সেন ছিলেন প্রধান অতিথি।
দারুন একটা প্রোগ্রামে থাকার অভিজ্ঞতা হল।
অমর্ত্য সেন তাঁর বক্তৃতায় দুবার বাংলাদেশের উদাহরণ দিলেন, কীভাবে বাংলাদেশ স্বল্প রিসোর্স নিয়ে স্বাস্থ্য খাতে অভুতপুর্ব উন্নতি করেছে তার বর্ননা দিলেন, তুলনা করলেন ভারতের স্বাস্থ্য খাতের ধীর অগ্রগতির সাথে। বাংলাদেশ নামটা উচ্চারণের সাথে তাঁর দুই চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠছিল।
প্রোগ্রামের শেষে বেচারার উপরে মোটামুটি সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লো; এ সেলফি তোলে তো সে অটোগ্রাফের জন্য বই বাড়িয়ে দেয়। কাছে যাওয়ার উপায় নেই। তবুও একটু ঠেলাঠুলি করে কাছে গিয়ে কোনমতে বাংলাদেশ থেকে এসেছি বলতেই সহাস্যে জায়গা করে নিজেই হাত দিয়ে কাছে টেনে নিলেন। আমি বললাম, বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আপনাকে আমরা ধন্যবাদ জানাই কারণ আপনি রোহিঙ্গাদের উপরে গণহত্যা নিরসনে জাতিসংঘকে হস্তক্ষেপ করতে বলেছেন। বাংলাদেশের জনগণ এবং নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগণ খুব খুশী হবে যদি আপনি নিজে একবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসেন।
তিনি বললেন, তিনি যেতে চান, তবে তার এখন ক্যান্সারের চিকিৎসা চলছে, কোথাও যেতে হলে ডাক্তারের পরামর্শ দরকার হবে। আমি বললাম, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপরে চলা এই নির্মম গণহত্যার বিষয়ে কোন বার্তা দেবেন কী? তিনি বললেন, মায়ানমারের শাসক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপরে যে অসহনীয় বর্বরোচিত গণহত্যা চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে সকল মানুষের রুখে দাঁড়ানো উচিত যেন এই গণহত্যার বিচার হয়, রোহিঙ্গারা তাদের স্বদেশে ফিরতে পারে।